
প্রকাশিত: ৯ ঘন্টা আগে, ০৬:১৯ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
জীবনের ৪৩ টি বসন্ত কেটে গেছে ইউপি সদস্য ইয়ার মাহমুদের (৪৩)। তবুও হাল ছাড়েন নি লেখাপড়ার।এবার ২০২৫সালে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি পরীক্ষায় ‘এ’ গ্রেড প্রাপ্ত হয়ে পাশ করেছেন ইয়ার মাহমুদ। বলছিলাম গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ড সদস্য ইয়ার মাহমুদের কথা। তিনি উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের বাঁশবাড়ি গ্রামের মৃত ময়েজ উদ্দিনের ছেলে।
এক দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়ার কারণে অষ্টম শ্রেণিতে গিয়ে পড়াশোনা ছাড়তে হয় ইয়ার মাহমুদকে। সেসময় কৃষক বাবা অসুস্থ হওয়ার পর থেকেই সংসারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। তখন থেকেই সংসারের খাটুনি, অসুস্থ বাবা মায়ের চিকিৎসা এ নিয়ে বহুবছর কেটেছে।
তবুও পড়াশোনা করার আগ্রহ থেকে যায় ইয়ার মাহমুদের। নিজের একমাত্র মেয়েকে মাস্টার্স ডিগ্রী পর্যন্ত পড়াশোনা করিয়েছেন। বর্তমানে মেয়ে একটি স্কুলের সহকারী শিক্ষক।
২০২৩ সালে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শ্রীপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যান। ক্লাসে গেলে অনেকেই হাসাহাসি করতো। তবুও পিছু হাঁটেননি তিনি।
ইয়ার মাহমুদ বলেন,' মেয়ে স্কুল মাস্টার। আমার স্বপ্ন ছিল আমিও উচ্চ শিক্ষা নিবো। এটার প্রথম ধাপ পূর্ণ হলো। আমার স্ত্রী সন্তান,প্রতিবেশী এবং শিক্ষকদের কাছে ঋণী।
পড়াশোনা ছাড়া বর্তমান সমাজে কোন কাজ করা যায় না। এটা হোক ব্যবসা চাকুরি অথবা ব্যবসা। আমি যে মেম্বার এখানে আরও বেশি পড়াশোনা দরকার।’
ইয়ার মাহমুদের মেয়ে স্কুলশিক্ষক আরিফা খাতুন বলেন, ‘দরিদ্র কৃষকের ঘরে জন্ম হলেও বাবা স্কুল জীবনে খুব মেধাবী ছাত্র ছিলেন।বাবার এই বয়সে এসএসসি পরিক্ষায় পাশ করায় আমরা খুবই আনন্দিত।
শ্রীপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা সাইফুল ইসলাম বলেন,' জাতিকে পরিপূর্ণ এবং উন্নত শিকড়ে পৌঁছাতে হলে অবশ্যই সেদেশে বসবাসরত প্রতিটি নাগরিকের জ্ঞানার্জন আবশ্যক। আমরা জানি, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। ইয়ার মাহমুদ সমাজের জন্য একটি বার্তা। শিক্ষার আসলে কোনো বয়স নেই।
তার জীবনের মঙ্গল কামনা করি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের পক্ষে উনাকে স্বাগত জানাই।'
মন্তব্য করুন