
প্রকাশিত: ২ ঘন্টা আগে, ০৬:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে আদালত।
দলের সাবেক সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদসহ কয়েকজন নেতার নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত ‘ঐক্য সম্মেলন’-এর পর এই আদেশ আসে।
আনিসুল ইসলাম মাহমুদ মামলা প্রত্যাহার করায় মঙ্গলবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা জজ রুবায়েত ফেরদৌস এই আদেশ দেন, যার ফলে জিএম কাদেরের দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী।
একই সঙ্গে জিএম কাদেরের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির যুগ্ম দপ্তর সম্পাদক মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক কার্যক্রমে থাকা অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞাও প্রত্যাহার করা হয়েছে।
জিএম কাদেরের আইনজীবী মনোয়ার হোসেন আলম জানান, “মামলার বাদী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ২ অগাস্ট মামলাটি প্রত্যাহার করে নেওয়ার আবেদন করেন। পরে ১১ আগস্ট মামলাটি ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালত থেকে ষষ্ঠ যুগ্ম জেলা জজ আদালতে বদলি হয়।
পরের দিন বিচারক মামলা প্রত্যাহারের আবেদন মঞ্জুর করেন। একইসঙ্গে জিএম কাদের ও মাহমুদ আলমের দলীয় কার্যক্রমে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রত্যাহার করেন।”
এর আগে ৩০ জুলাই আদালত জিএম কাদের ও মাহমুদ আলমের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। একই সঙ্গে জিএম কাদের দলের যে ১০ নেতাকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন, তাদের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
২৮ জুন প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে ওই ১০ জনকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং জাতীয় পার্টির ওয়েবসাইট থেকেও তাদের নাম মুছে ফেলা হয়।
ওই ঘটনায় ১০ জুলাই অব্যাহতিপ্রাপ্ত নেতারা জিএম কাদেরসহ চারজনকে বিবাদী করে আদালতে মামলা করেন। অন্য বিবাদীরা হলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ও নির্বাচন কমিশন সচিব।
মামলার ১০ বাদীর মধ্যে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মো. মুজিবুল হক পরে রওশনপন্থি জাতীয় পার্টির নেতাদের নিয়ে আলাদা সম্মেলন করে নতুন কমিটি গঠন করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা গঠনতন্ত্র পরিপন্থিভাবে জিএম কাদেরকে পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা করেন। পরে ২৮ ডিসেম্বর জিএম কাদের পার্টির সম্মেলন ও কাউন্সিল করে নতুন গঠনতন্ত্র অনুমোদন করেন। চলতি বছরের ২৮ জুন তিনি দলের প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ ১০ জনকে অব্যাহতি দেন।
গত ৯ আগস্ট রওশন এরশাদপন্থিদের নিয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও মো. মুজিবুল হক চুন্নুর নেতৃত্বে দলের আরেক অংশ ঐক্য সম্মেলন করে। এতে আনিসুল ইসলাম মাহমুদকে চেয়ারম্যান, এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদারকে মহাসচিব, কাজী ফিরোজ রশিদকে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান এবং মো. মুজিবুল হক চুন্নুকে নির্বাহী চেয়ারম্যান করা হয়।
সাবেক সামরিক শাসক এইচ এম এরশাদের প্রতিষ্ঠিত জাতীয় পার্টি ২০২৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর থেকে অভ্যন্তরীণ সংকটে আছে। জ্যেষ্ঠ নেতাদের একটি অংশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পর্কের সমালোচনা করে জিএম কাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরানোর উদ্যোগ নিলে দল ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়ে। পরবর্তীতে তারা জিএম কাদেরকে বাদ দিয়ে নতুন কমিটি ঘোষণা করে।
মন্তব্য করুন