প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বার, ২০২৫, ০৬:০৩ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

যশোরে সব মন্দির মন্ডপে সিসি ক্যামেরা নিশ্চিত করতে হবে

 

আনোয়ার হোসেন.নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতাদের সাথে মতবিনিময় করেছেন যশোর পুলিশ সুপার রওনক জাহান।গতকাল ১৫ই সেপ্টন্বর সোমবার বিকালবেলা

যশোর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট, বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের নেতাগন অংশ গ্রহণ করেন। নেতৃবৃন্দরা আসন্ন শারদীয়া দুর্গাপূজা উদযাপনে সংকট ও চ্যালেঞ্জ এর বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার রওনক জাহান বলেন, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে সার্বিক নিরাপত্তার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। পুলিশ ও আনসার সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। পাশাপাশি প্রত্যেকটি মণ্ডপে স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করবে। পূজা মন্ডপের নিরাপত্তায় সিসি ক্যামেরা নিশ্চিত করতে হবে। অর্থ সংকটে কোনো মণ্ডপ কর্তৃপক্ষ সিসি ক্যামেরা ক্রয় করতে না পারলেও ভাড়া করতে হবে। সেটিও সম্ভব না হলে পুজা পরিষদ সহ সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা নিয়ে হলেও মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনিআরও বলেন, শারদীয় দুর্গাপূজায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বলয় থাকবে। শারদীয় দুর্গাপূজায় ধর্মীয় আচারের পাশাপাশি সামাজিক উৎসবের যোগ আছে। কিন্তু মণ্ডপে কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে সেটি ধর্মীয় হিসেবেই প্রচার হবে। এজন্য আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। আপনাদের দেয়া যে কোনো অপরাধের তথ্য পেলে পুলিশ তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেবে।

পূজা মণ্ডপে ডিজে পার্টি নিয়ে অনেকেই কথা বলেছেন। এটা আমরা বন্ধ করতে চাই না। আপানার মন্দির কমিটি থেকেই ডিজে পার্টি বন্ধে রপদক্ষেপ নিবেন। উঠতি বয়সীরা মনে করে ডিজে পার্টি মানেই উৎসব। কিন্তু এটা তো পূজার উৎসবের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। এটা নিয়ে আপনারাই প্রশ্ন তুলেছেন, ডিজে পার্টি কিভাবে দুর্গোৎসবের অংশ হয়। তাই ডিজে পার্টির ব্যাপারে আপনারাই নিরুৎসাহিত করবেন।

পুজোর সময় যানজট নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে পুলিশ সুপার বলেন, যশোর শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় নতুন করে সাজানো হয়েছে। একই সাথে বাকী ৮টি থানা এলাকায় সীমিত পরিসরে হলে ট্রাফিক পুলিশের টিম কাজ করবে। স্বেচ্ছাসেবকদের সহযোগিতা ছাড়া পুরোপুরি যানজট নিয়ন্ত্রণ কঠিন হবে। এজন্য আপনাদের সহায়তা দরকার হবে।

নির্ধারিত সময়ে প্রতীমা বিসর্জনের বিষয়ে পুলিশ সুপার রওনক জাহান বলেন, সরকার নির্ধারিত রাত ৭টার মধ্যে প্রতীমা বিসর্জন দিতে হবে। রাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্ত সবার জন্য। কিন্তু কোনো কারণে ওই সময়ের মধ্যে বিসর্জন দিতে না পারলে কোনোভাবে রাত ১০টা পার করা যাবে না।’

মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) আবুল বাসার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) রুহুল আমিন, যশোর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতন ও সাধারণ সম্পাদক তপন কুমার ঘোষ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান নির্মল কুমার বিট, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ চৌগাছা শাখার সভাপতি অধ্যক্ষ বলাই চন্দ্র পাল, শার্শার সভাপতি বৈদ্যনাথ দাস, ঝিকরগাছার সভাপতি দুলাল অধিকারী, সদরের সভাপতি রবিন পাল, কেশবপুর উপজেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দুলাল সাহা, বাঘারপাড়া উপজেলা সভাপতি প্রণয় সরকার প্রমুখ।

জানা যায়, এ বছর যশোর জেলায় ৭০৫টি মন্দির ও মণ্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা হবে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় ১৬২টি, অভয়নগরে ১২৭টি, কেশবপুরে ৯৮টি, মণিরামপুরে ৯৬টি, বাঘারপাড়ায় ৯১টি, ঝিকরগাছায় ৫৪টি, চৌগাছায় ৪৮টি ও শার্শায় ২৯টি মন্দির রয়েছে। ২০২৪ সালে জেলায় ৬৫২টি শারদীয় দুর্গাপূজা হয়েছিল। ২০২৩ সালে জেলা মোট মন্দির ও মণ্ডপের সংখ্যা ছিল ৭৩৩টি। সেই হিসেবে গত বছর ৮১টি মন্দিরে দুর্গাপূজা কমলেও এবার বেড়েছে ৫৩টি। এ বছর এয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে পূজা হওয়ায় আগাম সতর্কতার পাশাপাশি নিরাপত্তার জোর দিয়েছে সরকার ।

মন্তব্য করুন