প্রকাশিত: ১৬ সেপ্টেম্বার, ২০২৫, ০৬:১৩ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

সাংবাদিকতা অপব্যবহার করলে স্বাধীনতা আবারও হারাতে হতে পারে . এম আবদুল্লাহ

 

আনোয়ার হোসেন.নিজস্ব প্রতিনিধিঃ

যশোর জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষ ‘অমিত্রাক্ষরে’ আয়োজিত গতকাল (১৫ই সেপ্টন্বর সোমবার) দুপুরের সময়  খুলনা বিভাগের পাঁচ জেলার সাংবাদিকদের মাঝে কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদানের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির  বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম আবদুল্লাহ বলেছেন, দীর্ঘ ফ্যাসিবাদী শাসনামলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বলে কিছু ছিল না। ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর সাংবাদিকরা অবাধ স্বাধীনতা ভোগ করছেন। কিন্তু অবাধ স্বাধীনতার নামে মনগড়া ও ভিত্তিহীন খবর প্রকাশ করা যাবে না। সাংবাদিকদের অবশ্যই বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করতে হবে। তা না হলে আরও বড় খেসারত দিতে হতে পারে। অপব্যবহার করলে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা আবার হারাতে হতে পারে। তিনি বলেন, ভুয়া বা ফেক নিউজ কে পুঁজি করে নতুন প্রেক্ষাপট তৈরির মাধ্যমে কোনো সরকার নতুন করে আইন তৈরির সুযোগ যেন না পায়, সেদিকেও আমাদের দৃষ্টি রাখা দরকার।

যশোর জেলা প্রশাসক মোঃআজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে করেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের উপ-পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) এবিএম রফিকুল ইসলাম, সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. রেজাউল করিম

সাংবাদিকদের মতদ্বৈততার কথা উল্লেখ করে বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি মুহম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, আমরা নিজেরা এখন বিভাজন সৃষ্টি করছি। কে বিএনপিপন্থী, কে জামায়াতপন্থী এগুলো উত্থাপনের মাধ্যমে সেই বিভাজনের দেয়াল তৈরি করা হচ্ছে। একে অপরকে ঘায়েল করার চেষ্টা হচ্ছে। এই আত্মঘাতী অবস্থা থেকে বের হতে না পারলে ৫ই আগস্টের আগের চেয়েও আমরা আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার  হতে হব।

দেশের গণতন্ত্র ও আমাদের মূল্যবোধ এ বিষয়গুলো মাথায় রেখে পরস্পরের প্রতি কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই বাংলাদেশের পক্ষে। দেশ গড়ব আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে একসাথে কাজ করি।

 

সম্প্রতি কক্সবাজারে সাবেক একজন রাষ্ট্রদূতের অনুপস্থিতিতে একটি বৈঠকের সংবাদের উল্লেখ করে মুহম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন, তিনি এদেশেই ছিলেন না, অথচ আমরা লিখে দিলাম সেখানে বৈঠক করেছে। দেশের অনেক দায়িত্বশীল মিডিয়া সেখানকার তথাকথিত ওই বৈঠকের সংবাদ প্রকাশ করে। সাংবাদিকদের লেখার যেমন স্বাধীনতা থাকবে, পাশাপাশি দায়িত্বশীলতার জায়গা রাখতে হবে।

সাংবাদিকদের জন্য শুধু অনুদান প্রদানই নয় উল্লেখ করে কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল্লাহ বলেন, ‘সাংবাদিকদের সন্তানদের লেখাপড়া সচল রাখতে তাদের জন্য শিক্ষাবৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। শেষ বয়সে যেন সাংবাদিকরা তাদের চিকিৎসার জন্য খরচ করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে চিকিৎসাভাতার ব্যবস্থা করারও চেষ্টা করবো। সাংবাদিকদের পেনশনের জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, তাদের জন্য ঝুঁকিভাতার বিষয় টিআমাদের চিন্তায় রয়েছে।

প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, দৈনিক লোকসমাজের প্রকাশক শান্তনু ইসলাম সুমিত, বিএফইউজে নেতা রাশিদুল ইসলাম, প্রেসক্লাব যশোরের সাবেক সম্পাদক আহসান কবীর, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সাবেক সভাপতি নূর ইসলাম। সার্বিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের বর্তমান সভাপতি আকরামুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক এসএম ফরহাদ প্রমুখ।

এই অনুষ্ঠানে খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা, নড়াইল ও মাগুরার ৪৫ জন সাংবাদিক কে ২৫ লাখ টাকা অনুদানের চেক প্রদান করা হয়েছে।

অনুষ্ঠান শেষে সামাজিক ও পরিবেশ সুরক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সাবেক সভাপতি শহিদ জয় কে সম্মাননা ক্রেস্ট প্রদান করা হয়।

মন্তব্য করুন