রূপালী প্রতিকেদক

প্রকাশিত: ১২ মে, ২০২৪, ০৯:২২ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

বুড়িচংয়ে দুই পরিবারকে অচেতন করে ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুট

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

 কুমল্লিার বুড়িচংয়ের ময়নামতি ঝুমুর গ্রামে দুই পরিবারের সদস্যকে অচেতন করে ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুটের ঘটনা ঘটেছে। গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতের এ ঘটনায় বুড়িচং থানায় অভিযোগ দায়ের হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ।
 ভুক্তভোগী  ঐই দুই পরিবারের ৩ সদস্য বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মামলা সূত্রে জানা গেছে, নগদ ৭ লাখ টাকা, আনুমানিক ২০ থেকে ২১ ভরি স্বর্ণালংকার ও মূল্যবান সামগ্রীসহ প্রায় ৩০ লাখ টাকার মালামাল লুটপাটের ঘটনা ঘটছে। খবর পেয়ে গত শুক্রবার সকালে বুড়িচং থানাধীন দেবপুর ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেছেন।

পুলিশ ও পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, খাবারের সাথে চেতনানাশক বা বিষাক্ত দ্রব্য মিশিয়ে এঘটনা ঘটানো হয়েছে। এদিকে শারিরীক অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোহেল ভূইয়ার চাচা ওহিদ ভূইয়াকে শুক্রবার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে বুড়িচং থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরে করেছেন।

বুড়িচং উপজেলার ময়নামতি ইউপির ঝুমুর গ্রামের ভুইয়া বাড়ির বাসিন্দা ভুক্তোভেগী ব্যবসায়ী ও ব্রিকস ফিল্ড ম্যানেজার সোহেল ভূইয়া তার স্বজন ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে জানান, সোহেল ভূইয়া ও তার চাচা ওহিদ ভূইয়া একই বাড়িতে বসবাস করেন। গত বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক সারে ৯টায় বাড়িতে যান তিনি। এসময় সন্তান ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মাথা ঘোরানো সহ শারিরীক সমস্যার কথা জানেন স্ত্রীর কাছ থেকে। পরে তিনি বাড়িতেই রান্না করা রাতের খাবার খান। এরপর থেকে নিজেও একই শারিরীক সমস্যা ভুগতে শুরু করেন। একপর্যায়ে তিনিও অচেতন হয়ে পড়েন। ভোরে কিছুটা চেতনা ফিরে পেয়ে ঘরের মালামাল এলোমেলো দেখতে পান। নিজেও ততটা সুস্থ না থাকায় প্রতিবেশী ও স্বজনদের ডেকে বাড়িতে আসতে বলেন।

পরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা বাড়িতে এসে তার ও চাচা ওহিদ ভূইয়ার ঘরেও একই অবস্থা দেখতে পান। পরে তৎক্ষনিক অচেতন অবস্থায় দ্রুত পরিবারের সকলকে ক্যান্টনমেন্ট মার্কেট সংলগ্ন ময়নামতি জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। এদিকে ঘটনা শুনে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ এলাকা থেকে সোহেল ভূইয়ার শাশুড়ী মেয়ের বাড়িতে আসেন। শুক্রবার দুপুরে মেয়ের রান্না করা একই খাবার খেয়ে তিনিও অচেতন হয়ে পড়লে তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভুক্তভোগী পরিবার, স্বজন ও পুলিশের ধারনা বাড়ির কাজের লোক বা পারিবারের সদস্যদের কেউ খাবারে চেতনানাশক বা কোন দ্রব্য মিশিয়ে থাকতে পারে।

ওহিদ ভূইয়ার মেয়ে নিপা আক্তার জানান, ভাই ও চাচাতো ভাইদের ফোন পেয়ে বাড়িতে আসেন তিনি। কিছুদিন আগে ভাইয়ের বিয়ে হয়েছে। ঘটনার সময় ভাবি ভাই কেউ বাড়িতে না থাকায় বাবা একাই বাড়িতে ছিলেন। ঘরে থাকা নগদ আনুমানিক ৪/৫ লাখ টাকা ও প্রায় ১৮ থেকে ১৯ ভরি স্বর্ণালংকারসহ দুটো মোবাইল ফোন নিয়ে গেছে অজ্ঞাত দূষ্কৃতকারীরা । এছাড়া চাচাতো ভাই সোহেল ভূইয়ার ঘর থেকে আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ দেড় লাখ টাকা ও মেবাইল ফোন নিয়ে যায়। পরিবারের সদস্যরা জানান, ওহিদ ভূইয়ার শারিরীক  অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার ঢাকায় নিয়ে একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বুড়িচং থানাধীন দেবপুর ফাঁড়ি পুলিশের ইনচার্জ (ইন্সপেক্টর) জাবেদুল ইসলাম জানান, তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি ও অচেতন থাকায় ভিকটিমটিদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে টাকা ও স্বর্ণ লুটপাটের ঘটনায় তদন্ত চলছে।

বুড়িচং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসনাত করিম রূপালী বাংলাদেশকে জানান, ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়াধীন। এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি। দ্রুত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

 

মন্তব্য করুন