প্রকাশিত: ৩ ঘন্টা আগে, ০৬:২৫ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

সংসদ নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, সিদ্ধান্তহীন ভোটারের সংখ্যা  ৪৮.৫০ শতাংশ

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের মূল্যায়ন, সংস্কার, নির্বাচন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জনপ্রিয়তা নিয়ে’ একটি জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। 

বিআইজিডি ও সংস্কারবিষয়ক নাগরিক প্ল্যাটফর্ম ভয়েস ফর রিফর্ম যৌথভাবে রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের জাতীয় আর্কাইভস মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে এই ফলাফল উপস্থাপন করা হয়।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কাকে ভোট দেবেন, এই প্রশ্নে সিদ্ধান্তহীন মানুষের হার ৪৮ দশমিক ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে, যা গত বছরের অক্টোবরে ৩৮ শতাংশ ছিল। কাকে ভোট দেবেন না জানাতে চান না ১৪ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং ভোট দেবেন না বলেছেন ১ দশমিক ৭০ শতাংশ মানুষ।

জরিপে বিএনপি ভোটার ১২ শতাংশ, জামায়াতে ইসলামী ভোটার ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ভোটার ২ দশমিক ৮০ শতাংশ।

 গত অক্টোবরে বিএনপি ভোটার ছিল ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ, জামায়াত ১১ দশমিক ৩০ শতাংশ ও এনসিপি ২ শতাংশ। এতে দেখা যায় বিএনপি ও জামায়াতের ভোট কিছু কমেছে, এনসিপির ভোট সামান্য বেড়েছে।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ ভোটার ৭ দশমিক ৩০ শতাংশে নেমেছে, যা গত অক্টোবরে ছিল ৮ দশমিক ৯০ শতাংশ। জাতীয় পার্টির ভোট ০.৭০ শতাংশ থেকে ০.৩০ শতাংশে, অন্যান্য ইসলামি দলের ভোট ২.৬০ শতাংশ থেকে ০.৭০ শতাংশে নেমেছে।

নির্বাচনী এলাকায় কোন দলের প্রার্থী জিতবে, সে প্রশ্নে ৩৮ শতাংশ মানুষ বিএনপির প্রার্থীকে এগিয়ে মনে করেন, ১৩ শতাংশ জামায়াত এবং ১ শতাংশ এনসিপির প্রার্থীকে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে ৭ শতাংশ মানুষ এগিয়ে মনে করেন।

বিআইজিডির ফেলো সৈয়দা সেলিনা আজিজ জানান, জরিপে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৫ হাজার ৪৮৯ জন মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন। তাদের ৫৩ শতাংশ পুরুষ, ৪৭ শতাংশ নারী; ৭৩ শতাংশ গ্রামীণ ও ২৭ শতাংশ শহুরে। 

জরিপে দেশের রাজনীতি, অর্থনীতি ও বিভিন্ন বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়। এটি ২০২৫ সালের ১ থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত চালানো হয়।

বর্তমান রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে মানুষের আশাবাদ কিছুটা মিলছে। ৪২ শতাংশ মানুষ মনে করেন দেশ রাজনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে, আর ৪৫ শতাংশ অর্থনৈতিকভাবে সঠিক পথে আছে। তবে গত বছর এই সংখ্যা যথাক্রমে ৫৬ এবং ৪৩ শতাংশ ছিল।

অন্তর্বর্তী সরকারের কাজের মূল্যায়নে ৬৩ শতাংশ মানুষ সরকারকে ভালো নম্বর দিয়েছেন, যা গত অক্টোবরে ছিল ৬৮ শতাংশ।

সংস্কার নিয়ে প্রশ্নে ৫১ শতাংশ মানুষ ভালোভাবে সংস্কার করে নির্বাচন চান, ১৭ শতাংশ কিছু জরুরি সংস্কার সহ নির্বাচন চান, ১৪ শতাংশ সংস্কার ছাড়াই নির্বাচন চান এবং ১৩ শতাংশ সংস্কারের বিষয়ে অনিশ্চিত।

প্রয়োজনীয় সংস্কার হিসেবে আইনশৃঙ্খলা উন্নয়ন (৩০%), বিচার ব্যবস্থার উন্নতি (১৬%), নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ (১১%), অর্থনীতি উন্নয়ন (১৬%), নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানো (১৩%), বেকারত্ব হ্রাস (১০%) এবং দুর্নীতি দমন (১৭%) উল্লেখ করা হয়।

জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে ৩২ শতাংশ মানুষ ডিসেম্বরের আগে নির্বাচন চান, ১২ শতাংশ ফেব্রুয়ারির মধ্যে, ১১ শতাংশ জুনের মধ্যে, এবং ২৫ শতাংশ ডিসেম্বর বা পরবর্তী সময় নির্বাচন চান।

৭০ শতাংশ মানুষ মনে করেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ হবে, ১৫ শতাংশ মনে করেন সুষ্ঠু হবে না এবং ১৪ শতাংশ জানেন না।

অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন বিআইজিডির ফেলো মির্জা এম হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক আসিফ মোহাম্মদ শাহান এবং সঞ্চালনা করেন ভয়েস ফর রিফর্মের সহ-আহ্বায়ক এ কে এম ফাহিম মাশরুর।

মন্তব্য করুন