প্রকাশিত: ৬ ঘন্টা আগে, ১২:২২ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

উপদেষ্টা মাহফুজকে বোতল নিক্ষেপ : 'আমি তাদের নাম বলবো না, আপনারা খুঁজে বের করুন'

 

সদরুল আইনঃ

তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামনে গিয়ে কথা বলার সময় তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে বোতল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। 

এ ঘটনার জন্য একটি গোষ্ঠীকে দায়ী করে তিনি বলেন, ‘আমি তাদের নাম আজ উল্লেখ করব না। মিডিয়ার দায়িত্ব, প্রশাসনের দায়িত্ব তাদের এবং তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা খুঁজে বের করা।’

বুধবার রাত ১০টার পর রাজধানীর কাকরাইল মোড়ে গিয়ে সেখানে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনরত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি কথা বলার এক পর্যায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। 

এর মধ্যে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মাথা লক্ষ্য করে একটি পানির বোতল নিক্ষেপ করা হয়। এরপর আর কথা না বলে তিনি সেখান থেকে চলে যান।

এর প্রায় ১৫ মিনিট পর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। 

এ সময় তিনি বলেন, ‘আমার সাথে যেটা হয়েছে আজকে, আমি এখানে আসার পরে, একটি অংশ আমি যাদের মনে করি, স্যাবেটুর, যারা স্যাবোটাজ করার জন্য বিভিন্ন আন্দোলনে ঢোকে, আমি শুধু তাদের নাম আজ উল্লেখ করব না। 

মিডিয়ার দায়িত্ব, প্রশাসনের দায়িত্ব তাদের এবং তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা খুঁজে বের করা।’

মাহফুজ আলম বলেন, ‘আপনারা খুঁজে বের করুন। দেখবেন, একটি গ্রুপকেই পাওয়া যাবে। তাদের নির্দিষ্ট একজন ব্যক্তির প্রতি যে হিংসা আট মাস ধরে রয়েছে এবং তাদের যে হিংস্রতা অনলাইনে দেখা যায়, তারা আজকে এখানে এটা করেছেন।’

পরে রাত ১২টার দিকে সেখানে শিক্ষার্থীদের পক্ষে কথা বলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সদস্যসচিব শামসুল আরেফিন। তথ্য উপদেষ্টার মাথায় পানির বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় তিনি বলেন, ‘আমরা এ ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। 

তবে আমরা মনে করি, এ ঘটনার জন্য কোনোভাবেই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা দায়ী নন।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসনব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন বৃত্তি ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে কার্যকর করা, বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করার তিন দফা দাবিতে কিছুদিন ধরে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।

ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল দুপুর পৌনে ১২টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাত্তরের গণহত্যা ভাস্কর্য চত্বরের সামনে থেকে লংমার্চ শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

 দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে লংমার্চ কাকরাইল মসজিদের সামনে পৌঁছালে বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় আন্দোলনকারীরা পুলিশের দেওয়া ব্যারিকেড ভেঙে যমুনার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। 

তখন পুলিশ লাঠিপেটা শুরু করে। একপর্যায়ে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে। 

এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে আন্দোলনকারীরা পিছু হটেন। এ সময় প্রায় অর্ধশত শিক্ষক-শিক্ষার্থী আহত হন বলে আন্দোলনকারীরা জানান।

পরে বেলা দুইটার দিকে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এ মোড় দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। 

বিকেলে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আটটি বাসে এসে তাদের সঙ্গে যোগ দেন কয়েক শ শিক্ষক-শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক সাবিনা শরমীন ছিলেন।

মন্তব্য করুন