মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ১৪ মার্চ, ২০২৪, ০৪:৪৯ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

লোক দেখানো অভিযান করলেন সিভিল সার্জন

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

মানিকগঞ্জ বে-সরকারি ক্লিনিক, ডায়াগনেষ্ট্রিক সেন্টার ও হাসপাতালের উপর লোক দেখানো অভিযান পরিচালনা করলেন সিভিল সার্জন ডা: মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী। এমনটাই মনে করেন সচেতন মহল।

জেলার বাস স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে শহরের ভিতর ও উপজেলা পর্যায়ে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রায় শতাধিকেরও বেশী ক্লিনিক ও হাসপাতাল আবাসিক ও বানিজ্যিক ভবনে এবং অলিতে গলিতে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে। বেশির ভাগ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে নেই ল্যাব টেকনোলজিস্ট ,এক্স-রে টেকনোলজিস্ট, নেই ডিপ্লোমা র্নাস, নেই নিদিষ্ট সংখ্যা ডিউটি ডাক্তার। অন কলে ডাক্তার ডেকে এনে করছে সার্জারী। আবার ১০ বেডের আবেদনকৃত হাসপাতালে দেখা যায় বেড আছে ২০ থেকে ২৫ টি এবং ২০ বেডের আবেদনকৃত হাসপাতালে বেড আছে ৪০ থেকে ৫০ টি । অথচ নেই সেই অনুপাতিক হারে জনবল । সহজ সরল রোগীরা দালালদের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে এসব হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কোন কোন হাসপাতালের মালিকরা এইসব অদক্ষ নার্স এবং ওটি বয় দিয়েই সিজার , এপ্রেন্ডিকস্ , পিত্তথলি পাথর ,জরায়ু সহ জটিল ও কঠিন অপারেশনের অ্যাসিস্ট করে থাকে। আবার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের নাম বলে শুধু এমবিবিএস চিকিৎসক দিয়েও করা হচ্ছে বড় ধরনের অপারেশন। যা সর্ম্পণ স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশ বিরোধী । 

ফলে অহরহ ঘটছে দুর্ঘটনা। মাঝে মধ্যে জেলার সিভিল সার্জন এসব হাসপতাল ও ক্লিনিকে অভিযান পরিচালনা করলেও রহস্যজনক কারনেই বন্ধ হচ্ছে না তাদের অনিয়ম। 

গত ৩ মার্চ (রবিবার) বেলা ১১টা থেকে শুরু করে বেলা ২ টা পর্যন্ত মা ও শিশু হাসপাতাল, প্রাইম হাসপাতাল ও ফিরোজা জেনারেল হাসপাতালে অভিযান পরিচালনা করেন সিভিল সার্জন। অভিযান পরিচালনার সময় হাসপাতাল তিনটিতে ডিউটি ডাক্তার, প্রশিক্ষিত নার্স, টেকনোলজিষ্ট, টেকনিশিয়ান ও দক্ষ জনবল না থাকায় মা ও শিশু ও প্রাইম হাসপাতালকে রন্ধ ঘোষনা করেন। কিন্তু ফিরোজা জেনারেল হাসপাতালে একই অভিযোগসহ সিভিল সার্জনের অনুমতি ছাড়া শিশুদের চিকিৎসার জন্য এন আই সি ইউ বসান। সেখানেও ছিল না কর্তব্যরত ডাক্তার। সেখান থেকে ২৪ ঘন্টার জন্য রোগীদের নিকট হতে হাতিয়ে নিচ্ছে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা। আবার কিছু দিন পূর্বেও ডাক্তার ও নার্স ছাড়া এই হাসপাতালের মালিক ওয়াহিদুর রহমান সাবিনা নামের এক মহিলার বাচ্চা প্রসব করায়। বাচ্চা প্রসবের পর পেটের ফুল না ফেলে একদিন পর রিলিজ দেয়। যার ফলে সেই মহিলার পেটের ভিতর জীবানুর সংক্রমন বৃদ্ধি পাওয়ায় আস্তে আস্তে মারা যান। 

এ বিষয়ে হাসপাতালের মালিক ওয়াহিদুর রহমানসহ পাঁচ জনের বিকরুদ্ধে অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত,মানিকগঞ্জে মামলা হয়। মামলাটি তদন্তাধীন থাকার পরও অভিযান পরিচালনাকারীদের অদৃশ্য কারনে বন্ধ হয়নি হাসপাতালটি। লোক দেখানোর জন্য হাসপতালটি আংশিক বন্ধ ঘোষনা করেন এমনটাই মনে করেন সচেতন মহল।

জেলার সিভিল সার্জন ডা: মো: মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী ফিরোজা জেনারেল হাসপাতালের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেন, সেখানে ডাক্তার ও নার্স ছিল। অনুমোতি ব্যতিত যে এন আই সি ইউ বসিয়েছিল তার জন্য আংসিক বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। প্রসূতীর গর্ভপাত করার ফলে প্রসূতীর মৃত্যুর ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।

 

মন্তব্য করুন