প্রকাশিত: ২২ ঘন্টা আগে, ০৪:৪১ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের রাজস্ব কর্মকর্তারা ১২ দিন পরে কর্মবিরতি  স্থগিত, কাজে ফিরেছেন

 

 

বেনাপোল থেকে আনোয়ার হোসেন জেলা প্রতিনিধি,যশোর:

রাজস্ব খাত সংস্কার নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ১২ দিন পরে সরকারের আশ্বাসে কর্মবিরতি স্থগিত করেছেন এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের রাজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এতে করে কাজে ফিরেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারিরা। টানা কর্মবিরতিতে বেনাপোল কাস্টমস হাউস শুল্কায়ন কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। শুল্কায়ন কার্যক্রম বন্ধ থাকার কারণে একদিকে যেমন সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হয়েছে, অন্যদিকে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন আমদানিকারকগন ।

গত ২৫ মে রাতে সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর কাজে যোগ দেবার সিদ্ধান্ত জানান এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের রাজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

আলোচনায় সরকার পক্ষ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্তির অধ্যাদেশটি সংশোধনের আশ্বাস দেওয়া হয়। জানানো হয়েছে, আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশ সংশোধন করে এনবিআরকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি স্বতন্ত্র ও বিশেষায়িত বিভাগে রূপান্তর করা হবে।

রাজস্ব নীতি পৃথক করণের কাঠামো কীভাবে প্রণীত হবে, সেই বিষয়ে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে আলোচনায়।

সরকার পক্ষ থেকে আরও জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ-২০২৫’ কার্যকর করা হবে না। এতে আন্দোলনরত কর্মকর্তাদের প্রধান আপত্তির বিষয়টি আপাততো নিস্ক্রিয় হয়ে যায়।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, দীর্ঘ ১২ দিন ধীরগতির কারণে অনেক কাজ পিছিয়ে গেছে। গত রাতে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ তাদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে নেয়ায় গতক সোমবার (২৬ মে) সকাল থেকে বাকি কাজ পুষিয়ে নিতে পুরোদমে কাজ শুরু করেছে সংস্কার ঐক্য পরিষদ। ১৪ মে থেকে ২৫ মে পর্যন্ত টানা ১২ দিন কর্মবিরতি পালন করেন কাস্টমস কর্মকর্তারা।

বেনাপোল কাস্টমস হাউজের রাজস্ব কর্মকর্তা শামীমা আক্তার বলেন, গত২৫ মে সকাল থেকে কাস্টমস হাউজ, বন্দর ও আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে কর্মবিরতি ছিল। রাতে জাতীয় রাজস্ব ঐক্য পরিষদের নেতারা সরকারের লিখিত আশ্বাস ও আলোচনার অগ্রগতির ভিত্তিতে কর্মবিরতির কর্মসূচি স্থগিত করে। একই সঙ্গে অংশীজনদের সম্মতিতে একটি টেকসই কাঠামো গঠনের প্রত্যাশাও ব্যক্ত করেছেন তারা।

প্রতিদিন বেনাপোল- পেট্রাপোল বন্দর দিয়ে ৪৫০ থেকে ৫০০ ট্রাক পণ্য ভারত থেকে আমদানি হয়। বেনাপোল দিয়ে ২৫০ থেকে ২৮০ ট্রাক পণ্য ভারতে রফতানী হয়েথাকে। দেশের ৭৫ ভাগ শিল্প প্রতিষ্ঠানের কাঁচামালের পাশাপাশি বিভিন্ন খাদ্যদ্রব্য ভারত থেকে আমদানি হয় এই বেনাপোল স্হল বন্দর দিয়ে।

যশোর চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মিজানুর রহমান খান জানায়, কাস্টমসের আন্দোলনের কারণে আমদানি রফতানিকারকগন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেনাপোল স্হলবন্দর যেন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত চার্জ না নেয়াহয় সেজন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান তিনি।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপ-পরিচালক মামুন কবির তরফদার জানান, স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বেনাপোল থেতে ভারতে রফতানি কমেছে। কাস্টমের কার্যক্রম গত ১২ দিন বন্ধ থাকার কারণে বন্দরে পণ্যজট দেখা দিয়েছে। বেনাপোল স্হল বন্দরে মালামাল রাখার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে ৫১ হাজার মেট্রিক টন। সেখানে বর্তমানে খালাস কমে যাবার কারণে ৭০ হাজার টন ছাড়িয়ে গেছে।

বেনাপোল কাস্টমস হাউজ এর অতিরিক্ত কমিশনার এইচ এম শরিফুল হাসান জানান, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ডাকা কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়েছে। কাস্টমের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়েছে ।

মন্তব্য করুন